অনেকেই জানতে চেয়েছেন বাসক সিরাপের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। বাসক সিরাপ
একটি হারবাল সিরাপ যা বুকের ভিতর জমে থাকা কফ অপসারণ করে। শুষ্ক কাশির নিরাময়
করে। ফুসফুসের দুর্বলতা, গলার স্বর ভঙ্গ রোগ উপশম করে। বাসক সিরাপ সর্দি, কাশি,
হাঁপানি ও
ব্রংকাইটিসের এর মত শ্বাসকষ্ট জনিত রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। যা শরীরের
ভেতরে জমে থাকা কফকে পাতলা করে এবং সহজে বের করতে সাহায্য করে। এছাড়াও আজকের
আর্টিকেলে বাসক পাতার ঔষধি গুনাগুন ও রস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত
আলোচনা করব।
বাসক সিরাপের উপকারিতা ও অপকারিতা বাসক সিরাপ একটি ভেষজ ঔষধ যা মূলত হাঁপানি,
অ্যাজমা, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যার সমাধান করে থাকে। এটি একটি
আয়ুর্বেদিক, হোমিও, ভেষজ ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বাসক সিরাপ এর
ভার্সিনিন নামক উপাদান রয়েছে যা কফকে পাতলা করে এবং ফুসফুস ও শ্বাসনালী থেকে বের
করে দিতে সাহায্য করে। অতিরিক্ত কাশির ফলে অনেক সময় অনেকের গলার স্বর ভেঙে যায়
এর ফলে কথা বলতে অনেকের সমস্যা হয়ে থাকে থেকে কার্যকর উপশম দিয়ে থাকে।
এই সিরাপ বিভিন্ন ভেষজ উদ্ভিদের সংমিশ্রণে তৈরি। এই উদ্ভিদগুলো বহুকাল ধরে সর্দি
কাশি ও ঠান্ডা চিকিৎসা ব্যবহার হয়ে আসছে। এই সিরাপ অনেক দিনের পুরাতন কাশি ভালো
করে। এটি শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য উপকারী। ঠান্ডা এলার্জি হাঁপানি ও গলা
ভাঙ্গার উপকার হয়ে থাকে। এই ওষুধটির মাধ্যমে যে কোন প্রবাহের বিপরীতে কাজ করে ও
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, কফ বের করতে সাহায্য করে, গলার স্বর পরিষ্কার রাখে।
এই সিরাপে রয়েছে অ্যান্টিহিস্টামিন এর উপাদান যা সকল ধরনের ঠান্ডা জনিত সমস্যার
সমাধান করে।
এটি ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক ধ্বংস করতে সাহায্য করে। এই সিরাপটি খাওয়ার মাধ্যমে
হাঁপানি ও শ্বাসকষ্টের তীব্রতা কমায় এবং শ্বাসনালী সতেজ রাখে। অনেকে নিঃশ্বাসে
দুর্গন্ধ থাকলে এই সিরাপটি ব্যবহার করতে পারেন, এতে করে নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ দূর
হবে। বাসক সিরাপের কিছু উপকারীতে নিচে আলোচনা করা হলোঃ
হাঁপানি এর উপকারিতা
শ্বাসনালী পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে
জ্বর ও গলা ব্যথা কমায়
সর্দি কাশিতে আরাম দেয়
বাসক সিরাপের অনেক উপকারী দিক থাকলেও কিছু অপকারী দিক রয়েছে। অতিরিক্ত
মাত্রায় বাসক সিরাপ সেবন করলে বমি বমি ভাব অথবা মাথা ঘোরা বা বমি হতে পারে।
অতিরিক্ত মাত্রায় সেবনের ফলে এটি কিছু ব্যক্তির মধ্যে অস্বস্তিকরভাব হতে পারে।
গর্ভবতী মহিলা এবং কোন রোগে ভুগছেন তাদের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই এই
ওষুধটি সেবন করা উচিত নয়। বাসক সিরাপের অপকারিতা নিচে আলোচনা করা হলোঃ
গর্ভবতী নারীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণঃ বাসক সিরাপটি অতিরিক্ত মাত্রায় সেবন করলে
গর্ভপাতের ঝুঁকি হতে পারে তাই এটি সেবনের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ
নেওয়া উচিত।
শিশুদের জন্য অতিরিক্ত ডোজঃ অতিরিক্ত মাত্রায় ওষুধটি সেবনের ফলে শিশুদের
শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে এজন্য শিশুদের খাওয়ানোর আগে চিকিৎসকের
নির্দেশনা ছাড়া খাওয়ানো উচিত নয়।
ডায়রিয়ার সমস্যাঃ অতিরিক্ত সেবনের ফলে ডায়রিয়া ও পেটে গ্যাস্টিকের
সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বাসক সিরাপ খাওয়ার নিয়ম
বাসক সিরাপ সাধারণত সর্দি কাশি ও গলা ব্যথার জন্য ব্যবহার করা হয় এর সঠিক নিয়ম
জানতে হলে সর্বদাই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করতে হবে অথবা সর্বদা প্যাকেজ
এর গায়ে লেখার নির্দেশনা পড়ে ব্যবহার করা উচিত কারণ বয়স ও অবস্থার উপর নির্ভর
করে ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে সাধারণত সিরাপ খাওয়ার পর বমি বা অসস্তি হলে অধিক
পরিমাণে খাওয়া উচিত নয় কারণ এতে বমি ভাব সহ অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বাসক সিরাপ খাওয়ার নিয়ম নিচে আলোচনা করা হলোঃ
সঠিক ডোজ ব্যবহার করাঃ আসুক সিরাপটি বয়স এবং শরীরের ওজনের ওপর নির্ভর করে
দোষ নির্ধারণ করা হয় ভুল পরিমাণ খেলে বমি হতে পারে এবং অন্যান্য সমস্যা দেখা
দিতে পারে।
ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াঃ গর্ভবতী এবং স্তন্যপান পরান এমন সময় ওষুধটি
সেবন করার জন্য অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এবং ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে
ভালোমতো ও সদস্যবনের ডোজ সম্পর্কে জানার পর ব্যবহার করতে হবে।
নির্দেশাবলী অনুসরণ করাঃ প্রতিটি সিরাপের দোষ ভিন্ন হতে পারে তাই
বোতলের গায়ে বা প্যাকেজের দেওয়ার নির্দেশিকা ভালোমতো পড়ে বুঝে তারপর সেবন
করা উচিত এতে করে পার্শ্ব প্রতিকের ঝুকি কম থাকে।
সাধারণত অবস্থা অনুযায়ী ভিন্ন হয় তবে প্রচলিতভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী
নিচে মতো করে ব্যবহার করতে হবে শিশুদের জন্য ব্যবহারের নিয়মঃ
২-৬ বছর বয়সী শিশুদের জন্যঃ প্রতিদিন১/২ চা চামচ(২. ৫ মি.লি.) দিনে ২-৩
বার।
৬-১২ বছর বয়সে দের জন্যঃ প্রতিদিন ১ চা চামচ(৫ মি. লি) দিনে ২-৩ বার।
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সিরাপটি ব্যবহারের নিয়মঃ
১২ বছরের ঊর্ধ্বে ও প্রাপ্তবয়স্ক দের জন্যঃ প্রতিদিন ২ চা চামচ(১০মি.লি) দিনে
২-৩ বার।
বাসক সিরাপ এর দাম কত
বাসক সিরাপ এর দাম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কারণ মানুষের সাধারণত সর্দি, কাশি,
ঠান্ডা জনিত সমস্যা এগুলো সব সময় হয়ে থাকে। বিভিন্ন ফার্মেসি অনুযায়ী বিভিন্ন
দাম নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে দোকানে বা ফার্মেসিতে কিছুটা ভিন্নতার
কারণে দাম ওঠানামা করে থাকে। প্রতি মিলিমিটার হিসেবে দামের কিছুটা কম এবং কিছুটা
বেশি ভিন্নতা দেখা দিতে পারে। বাংলাদেশে পাওয়া বিভিন্ন বাসক সিরাপের দাম
সম্পর্কে যে নিচে আলোচনা করা হলোঃ
ইবনে সিনা ফারমাসিটিক্যাল লিমিটেড এর বাসক সিরাপ প্রতি ১০০ মি. লি. বোতল
প্রায়ঃ ৭০টাকা।
একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড এর একমিস বাসক সিরাপ প্রতি ১০০ মি.লি. বোতল প্রায়
৭০ টাকা।
অনলাইন ফার্মেসি বাংলাদেশ প্রতি ২০০ মি.লি. বোতল বর্তমান দাম ৯৫ টাকা আগের
দাম ছিল ১০০ টাকা।
বাসক পাতার ঔষধি গুনাগুন
বাসক পাতার ঔষধি গুনাগুন অনেক বাসক সিরাপের উপকারিতা ও অপকারিতা তো অনেক রয়েছে
কিন্তু অনেকেই জানিনা বাসক পাতার ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কে। বর্তমান সময়ে সব কিছু
খাবারের মধ্যে ভেজাল রয়েছে আর এই অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের ফলে শরীরে নানান
রোগা দিয়ে বাসা বেধে থাকে। যার ফলে মানুষ অনেক বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। কিছু কিছু
রোগ আছে যেগুলো প্রতিকার বিভিন্ন ভেষজ উৎপাদন করা হয়ে থাকে। আমাদের চারপাশে এমন
অনেক প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে।
যেগুলো ব্যবহার করে স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করা যায়। এরকম একটি
ওষুধের গুণে ভরপুর প্রাকৃতিক উপায় ব্যবহার করা হয় বাসক পাতা। এটি আদিকাল থেকেই
কার্যকরী ঔষধ হিসেবে বাসক পাতা ব্যাপক ব্যবহার করা হচ্ছে। এই পাতা শুধু ঔষধ
হিসেবে নয় এর ফুল বা কল এবং শিকড়েও রয়েছে ঔষুধি গুনাগুন। বাসক পাতায়
প্রাকৃতিক জীবনের ধ্বংসকারী উপাদান থাকে যার সংক্রমণ ঠেকাতে সাহায্য করে এছাড়া
বাসক পাতায় আন্টি অক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে।
যা শরীরের কোষগুলিকে ক্ষয় রোধ করে এবং বার্ধক্য বিলম্বিত করে। বাসক পাতায় মূলত
একটি শক্তিশালী প্রাকৃতিক ঔষধের মত কাজ করে। বাসক পাতা শুধু ঔষধ নয় বরং পুষ্টিগত
দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। বাসক পাতা হলো ক্ষারীয় যৌগের আধার। যা জীবাণু ও রোগ
প্রতিরোধকারী এবং শরীর পরিষ্কারক শক্তিশালী রাখার জন্য প্রাকৃতিক উৎস। বৈজ্ঞানিক
পরীক্ষায় ও বাসকের ভেষজ গুণাবলী প্রমাণিত রয়েছে। বাসক পাতার নির্যাস রস বা
সিরাপ সর্দি, কাশি ও শ্বাসনালী প্রবাহ মুলক ব্যাধিতে বিশেষ উপকারী।
বাসক পাতার রস খাওয়ার নিয়ম
বাসক পাতার রস খাওয়ার নিয়ম যথাযথ ভাবে মেনে চলতে হবে যাতে করে এর উপকারিতা
পাওয়া যায় কোনরকম পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া না হয়। বাসক পাতার রস খুব দ্রুত সর্দি
কাশি বুকে জমে থাকা কফ দূর করতে সাহায্য করে। এর মধ্যে থাকা বিভিন্ন রাসায়নিক
উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ করতে অত্যন্ত কার্যকরী এবং অনেক ধরনের স্বাস্থ্য
সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করে থাকে। বাসক পাতার রস খাওয়ার নিয়ম, পদ্ধতি, পরিমাণ
নিচে দেওয়া হলঃ
প্রথমত বাসক গাছের ৭ থেকে ১০ টি পাতা সংগ্রহ করুন। সেগুলো ভালোভাবে ধুয়ে ব্লেডের
সাহায্যে পানি দিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। তারপর ছাঁকনিতে ছেঁকে রস বের করে নিতে হবে।
দিনে ১ থেকে ২ চা চামচ খাওয়াই যথেষ্ট। সকালে খালি পেটে খেলে বেশি উপকার পাওয়া
যায় অথবা বিকেলে খাওয়ার এক থেকে দুই ঘন্টা পরে কাশির শ্বাস কষ্ট থাকলে দিনে
দুইবার খেতে পারেন। বাসক পাতার রস যেভাবে খাবেন কাঁচা পাতা চিবিয়ে খেতে পারেন।
তবে এটা একটু তিতা সাদযুক্ত।
সরাসরি রস খেতে পারেন অথবা একটু সামান্য মধু আদার রস বা তুলসী পাতা মিশিয়ে খেলে
ভালো স্বাদ পাবেন এবং কার্যকারিতা দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। সরাসরি রস খেতে যেনা পারলে
বাসক পাতা দিয়ে চা বানিয়ে পান করা যায় বাসক পাতা গুড়া বাজারে পাওয়া যায়
সেটা হালকা গরম পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। অথবা বাসক সিরাপের
উপকারিতা এবং অপকারিতা বাসক পাতার সিরাপ খেলে উপকার পাওয়া যায় এবং হাঁপানি সহ
এজমা ও এলার্জি সমস্যা ভালো হয়।
বাসক পাতা খাওয়ার উপকারিতা
শীতের শুরুতেই ঠান্ডা গরমে সমস্যা সর্দি কাশির প্রকট বাড়ে। বাসক পাতার
ঠান্ডা সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। সর্দি কাশে সমস্যা দূর করতে বাসক পাতা
ব্যবহার বহু আলী কাল থেকেই আপনি যদি বহু পুরাতন সর্দি কাশি সমস্যা থেকে থাকে
তাহলে এক চামচ মধু বাসক পাতার সাথে মিশিয়ে খেলে সর্দি কাশি থেকে আরাম পাওয়া
যায়। বাসক পাতার শুধু শরীরের পক্ষে নয় বরং আমাদের ত্বকের পক্ষে
ভীষণ উপকারী পেট অপরিষ্কার থাকার কারণে অনেকে ব্রণের সমস্যা হয়।
বাসক পাতার রস খেলে এ থেকে উপকার পাওয়া যায় বাসক পাতা যেমন রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণ
করতে সাহায্য করে তেমনি রক্ত পরিষ্কার রাখতে ও কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও
চুলকানি প্রতিরোধ করতে বাসক পাতা খুব উপকারী। বাসক পাতার সাথে এক টুকরো কাঁচা
হলুদ একসাথে বেটে চুলকানির জায়গায় লাগিয়ে রাখলে কিছুদিনের মধ্যে ভালো হয়ে
যাবে। ঠান্ডা জড়িত সমস্যার কারণে বুকে কফ জমে থাকলে অতিরিক্ত কাশি হলে বাসক পাতার রস সাথে মধুর খেলে দীর্ঘদিন বুকে জমে থাকা কফ দূর হয় খুব সহজেই।
বাসক পাতা খাওয়ার অপকারিতা
প্রতিটা জিনিসের উপকারিতার পাশাপাশি অপকারিতা রয়েছে বাসক পাতা প্রাকৃতিক ঔষধি
হলেও ভুলমাত্র বা অনুউপযুক্ত ব্যবহারে কিছু সমস্যা তৈরি হতে পারে যা জানো অত্যন্ত
জরুরী। বাসক পাতা খাওয়ার অপকারিতা নিচে আলোচনা করা হলোঃ
হজমের সমস্যাঃ বাসক পাতায় বেশি বদলে খেলে পেটের সমস্যা যেমন বমি বমি
পাতলা পায়খানা পেটে ব্যথা হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এলার্জির প্রতিক্রিয়াঃ অনেকের ক্ষেত্রে বাসক পাতা খাওয়ার ফলে ত্বকের
চুলকানি বা ফুসকুড়ি শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়া চোখ দিয়ে পানি পড়া লাল হওয়া
ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
রক্তচাপ কম থাকলেঃ যাদের রক্তচাপ আগে থেকে কম তাদের ক্ষেত্রে বাসক পাতা
খাওয়া উচিত নয় কেননা বাসক প্রেসার কমিয়ে দিতে পারে তাই হয় টেনশনের
রোগীরা সতর্ক থাকবেন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করবেন।
অতিরিক্ত ব্যবহারে শরীর শুকিয়ে যাওয়াঃ বাসক পাতার রস শরীরের ভেতরে
মিউকাস শুকিয়ে দিতে পারে ফলে গলা শুকিয়ে যাওয়া, শরীরে পানি শূন্যতা
অনুভব হওয়ার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
গর্ভাবস্থায় বাসক পাতা খেলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় বাসক পাতা খেলে মা ও শিশু শারীরিক সমস্যা হতে পারে। কারণ এতে এমন
কিছু উপাদান রয়েছে যা মা ও শিশুর জীবনে ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায়
পাতা গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকাই উচিত। অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে বমি বমি ভাব, মাথা
ব্যথা, মাথা ঘুরে সমস্যা দেখা দিতে পারে। বাসক পাতা এমন কিছু উপাদান আছে যা
গর্ভপাত ঘটাতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায়ী সেবন করা অত্যন্ত ঝুঁকিপণ্য। বাসক পাতায়
ভাসিসিন নামক অ্যালকোহল থাকে যা জরায়ুর পেশি সংকোচন ঘটাতে পারে।
এর ফলে গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গর্ভের ভ্রনের বৃদ্ধি ও সুরক্ষার উপর
বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। বাসক পাতা অতিরিক্ত খেলে রক্তপাত, পেটের ব্যথা দেখা
দেয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে গর্ব অবস্থায় বাসক বাতাসে সেবনের ফলে শরীরের লো
প্রেসার, মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব দেখা দেয়। চিকিৎসকরা সাধারণত গর্ভাবস্থায় বাসক
পাতা বা সিরাপ খেতে নিষেধ করেন তবে প্রসবের সময় বা গর্ভপাত ঘটানোর জন্য
আয়ুর্বেদ চিকিৎসার এটি ব্যবহার করা হত কিন্তু তা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ তাই এটি
গর্ভাবস্থায় খাওয়া একেবারে উচিত নয়।
ডায়াবেটিস রোগীদের বাসক পাতা খাওয়ার নিয়ম
ডায়াবেটিস রোগীর ক্ষেত্রে বাসক পাতা খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। বাসক পাতা
মূলত কাজ করে কাজী কাশি সর্দিও শ্বাসকষ্ট কমানোর তবে ডায়াবেটিস খেতে কিছু বাড়তি
সতর্কতা রয়েছে। ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বাসক পাতার উপকারিতা অনেক বেশি ডায়াবেটিস
রোগীদের সিস্টেম দুর্বল হলে সর্দি কাশি বেশি হয় এতে করে বাসক পাতা সেবনে অনেক
উপকার পাওয়া যায়। ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে
বাসক পাতা।
শরীরের প্রভাব ও সংক্রমণ কমাতে বাসক পাতা বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। বাসক পাতা
শ্বাসকষ্ট রোগে আরাম দেয় ফুসফুস পরিষ্কার করেও শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক করতে
সাহায্য করে। ডায়াবেটিস রোগীদের বিশেষভাবে রক্ত শর্করা মাত্রা কিছুটা প্রভাবিত
করতে পারে তাই ব্লাড সুগার নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে। এক্ষেত্রে বাসক পাতা বেশি
পরিমাণে সেবনে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে যার ফলে কিডনি ও
লিভারের উপর চাপ পড়তে পারে। বাসক পাতা খাওয়ার নিয়ম করা হলোঃ
সেদ্ধ করেঃ ৪-৫ তাজা বাসক পাতা ধুয়ে ১ কাপ পানিতে ফুটিয়ে আধা কাপ হলে
নামাতে হবে। এরপর সেবন করতে হবে। দিনে এক থেকে দুইবার খাওয়া যেতে
পারে।
রস করেঃ ১-২ চা চামচ বাসক পাতার রস এমনও মধু দিয়ে মিশিয়ে খাওয়া যেতে
পারে। তবে অতিরিক্ত মাত্রায় ডায়াবেটিস থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী
সেবন করা উচিত।
মন্তব্যঃ বাসক সিরাপের উপকারিতা ও অপকারিতা
আজকের আর্টিকেলে বাসক সিরাপের উপকারিতা ও অপকারিতা থেকে শুরু করে বাসক
পাতার রস খাওয়ার নিয়ম, বাসক পাতার ঔষধি গুনাগুন, বাসক পাতার দাম ইত্যাদি
সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। বাসক সিরাপের উপকারিতা ও কার্যকরী গুনাগুন অনেক বেশি এবং অতিরিক্ত
মাত্রা সেবনের ফলে এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও দেখা দিতে পারে।
তাই সাবধানতা অবলম্বন করে ওষুধটি সেবন করা উচিত আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে বাসক
পাতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে কনটেন্ট ভালো লাগলে
প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন এবং আরো আর্টিকেল পেতে আমাদের পেইজে সাথেই থাকুন
এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। 250510
অর্গানিক সদাই২৪ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url